উকিলের বুদ্ধি
গরিব চাষা, তার
নামে মহাজন
নালিশ করেছে। বেচারা
কবে তার
কাছে পঁচিশ
টাকা নিয়েছিল,
সুদে-আসলে
তাই এখন
পাঁচশো টাকায়
দাঁড়িয়েছে।
চাষা অনেক
কষ্টে একশো
টাকা যোগাড়
করেছে; কিন্তু
মহাজন বলছে,
"পাঁচশো টাকার এক পয়সাও কম
নয়; দিতে
না পার
তো জেলে
যাও।"
সুতরাং চাষার
আর রক্ষা
নাই।
এমন সময় শামলা
মাথায় চশমা
চোখে তোখোড়-বুদ্ধি উকিল
এসে বলল,
"ঐ একশো
টাকা আমায়
দিলে, তোমার
বাঁচবার উপায়
করতে পারি।" চাষা তার হাতে ধরল,
পায়ে ধরল,
বলল, "আমায় বাঁচিয়ে দিন।"
উকিল বলল,
"তবে শোন, আমার ফন্দি বলি। যখন
আদালতের কাঠগড়ায়
গিয়ে দাঁড়াবে,
তখন বাপু
হে কথা-টথা কয়ো
না।
যে যা
খুসি বলুক,
গাল দিক
আর প্রশ্ন
করুক, তুমি
তার জাবাবটি
দেবে না—
খালি পাঁঠার
মতো 'ব্যা—'
করবে।
তা যদি
করতে পার,
তা হ'লে আমি
তোমায় খালাস
করিয়ে দেব।" চাষা বলল, "আপনি কর্তা
যা বলেন,
তাতেই আমই
রাজী।"
আদালতে মহাজনের মস্ত
উকিল, চাষাকে
এক ধমক
দিয়ে জিজ্ঞাসা
করল, "তুমি সাত বছর আগে
পঁচিশ টাকা
কর্জ নিয়েছিলে?"
চাষা তার
মুখের দিকে
চেয়ে বলল,
"ব্যা—"। উকিল
বলল, "খবরদার!— বল, নিয়েছিলি কি
না।"
চাষা বলল,
"ব্যা—"। উকিল
বলল, "হুজুর! আসামীর বেয়াদবি দেখুন।" হাকিম রেগে বললেন, "ফের
যদি অমনি
করিস, তোকে
আমই ফাটক
দেব।"
চাষা অত্যন্ত
ভয়ে পেয়ে
কাঁদ কাঁদ
হ'য়ে
বলল, "ব্যা— ব্যা—"। হাকিম
বললেন, "লোকটা কি পাগল নাকি?"
তখন চাষার উকিল
উঠে বলল,
"হুজুর, ও কি আজকের পাগল—
ও বহুকালের
পাগল, জন্মে
অবধি পাগল। ওর
কি কোনো
বুদ্ধি আছে,
না কাণ্ডজ্ঞান
আছে? ও
আবার কর্জ
নেবে কি!
ও কি
কখনও খত
লিখতে পারে
নাকই? আর
পাগলের খত
লিখলেই বা
কি? দেখুন
দেখই, এই
হতভাগা মহাজনটার
কাণ্ড দেখুন
তো! ইচ্ছে
ক'রে
জেনে শুনে
পাগলটাকে ঠকিয়ে
নেবার মতলব
করেছে।
আরে, ওর
কি মাথার
ঠিক আছে?
এরা বলেছে,
'এইখানে একটা
আঙ্গুলের টিপ
দে'— পাগল
কি জানে,
সে অমনি
টিপ দিয়েছে। এই
তো ব্যাপার!"
দুই উকিলে ঝগড়া
বেধে গেল। হাকিম
খানিক শুনে-টুনে বললেন,
"মোকদ্দমা ডিস্মিস্।" মহাজনের তো চক্ষুস্থির।
সে আদালতের
বাইরে এসে
চাষাকে বলল,
"আচ্ছা, না হয় তোর চারশো
টাকা ছেড়েই
দিলাম — ঐ
একশো টাকাই
দে।"
চাষা বলল,
"ব্যা—!" মহাজন যতই
বলে, যতই
বোঝায়, চাষা
তার পাঁঠার
বুলি কিছুতেই
ছাড়ে না। মহাজন
রেগে-মেগে
ব'লে
গেল, "দেখে নেব, আমার টাকা
তুই কেমন
ক'রে
হজম করিস।"
চাষা তার পোঁটলা
নিয়ে গ্রামে
ফিরতে চলেছে,
এমন সময়
তার উকিল
এসে ধরল,
"যাচ্ছ কোথায় বাপু? আমার পাওনাটা
আগে চুকিয়ে
যাও।
একশো টাকায়
রফা হয়েছিল,
এখন মোকদ্দমা
তো জিতিয়ে
দিলাম।"
চাষা অবাক
হ'য়ে
তার মুখের
দিলে তাকিয়ে
বলল, "ব্যা—।" উকিল বলল,
"বাপু হে, ও-সব চালাকি
খাটবে না—
টাকাটি এখন
বের কর।" চাষা বোকার মতো মুখ
ক'রে
আবার বলল,
"ব্যা—।" উকিল তাকে নরম
গরম অনেক
কথাই শোনাল,
কিন্তু চাষার
মুখে কেবলই
ঐ এক
জবাব! তখন
উকিল বলল,
"হতভাগা গোমুখ্যু পাড়াগেঁয়ে ভূত—তোর
পেটে অ্যাতো
শয়তানি কে
জানে! আগে
যদি জানতাম
তা হ'লে পোঁটলাসুদ্ধ
টাকাগুলো আটকে
রাখতাম।"
বুদ্ধিমান উকিলের আর
দক্ষিণা পাওয়া
হল না।
THE LAWYER'S PLAN
There was a poor farmer who was being harassed by a money
lender. The wretch had allegedly taken twenty five rupees as a loan and that
had now accumulated interest and become five hundred rupees. The farmer had
managed to get together a hundred rupees with great difficulty but the moneylender said, ‘Nothing
doing! Not a paisa less than the five hundred rupees! If you cannot cough up
the money, then you must go to jail.’ There was really very little that the
farmer could do to save himself.
Who should come along just then but a clever lawyer in a wig
and glasses? He said, ‘If you give me the hundred rupees I can see to it that
you are let off.’ The farmer clasped his hands and groveled at his feet,
pleading, ‘Please, save me!’ The lawyer said, ‘Listen to my plan. When they call
you to take the stand, do no say a single word for goodness sake. Let them say whatever
they want, let them curse you and ask you all the questions they want – you
must not say a thing in answer. Just say ‘baa’ like a sheep. If you can do that
I will get you off scot free.’ The farmer answered, ‘My lord, you know
everything, I will do just as you say.’
In the court the moneylender’s lawyer asked the farmer, ‘Did
you take twenty five rupees as a loan seven years ago?’ The farmer answered,
‘Baa!’ The lawyer threatened him and said, ‘Watch it! Say that you did!’ The
farmer still said, ‘Baa!’ The lawyer appealed to the judge, ‘See the cheek of
the accused!’ The judge was furious and said, ‘You do that once again and I
will personally send you to jail!’ The terrified farmer became tearful and
said, ‘Baa,baa!’The judge asked, ‘Is the fellow mad?’
Then the farmer’s lawyer stood up and said, ‘Milord, he has
been mad for a long time, in fact he was born with this condition. He has
neither sense not comprehension. How would he take out a loan? Does he even know
how to sign a document? And even if he did, how is that valid if a mad man has
signed it? See what this money lender has done! He has tried to knowingly cheat
a lunatic! I say, is he in a state to know what he is doing? Perhaps he was
asked, put your thumbprint here – he went and did it without understanding what
was going on!’
The two lawyers started to fight. The judge listened to them
for a short while and declared the case dismissed. The money lender was aghast.
He met the farmer outside the court and said, ‘Okay, keep the four hundred you
owe me; at least give me the hundred you managed to get together.’ The farmer
said, ‘Baa!’ The more the moneylender coaxed and cajoled with him, the more the
farmer baa-d in response. The money lender finally got angry and said, ‘Fine, I
will see how you get away with stealing what is mine!’
The farmer was about to set off for his village with his
bundle when the lawyer came up and said, ‘Where are you going so quickly? Give
me my dues! Remember we agreed on a hundred rupees if you won? Well, now you
have won the case.’ The farmer looked at him in amazement and said, ‘Baa!’ The
lawyer said, ‘Look here, you don’t try that with me! Give me my money now!’ The
farmer stared at him stupidly and said, ‘Baa!’ The lawyer tried threatening him
and sweet talking him but all the farmer would do was bleat. Then the lawyer
said, ‘Wretched, rustic, stupid yokel! Who knew you had such deviousness in
you? If I had known I would have taken your bundle of money from you right at
the beginning.’
The clever lawyer never did get paid.
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.